শহরের ধূলিকণার মধ্য দিয়ে বেড়া ওঠা জীবনে আমাদের সবচেয়ে অনিয়ম হয় বুঝি এই শরীর- স্বাস্থ্য নিয়েই। খাবারে অনিয়ম, কাজের প্রেশার, মানসিক চাপ আমাদের সাথে লেগেই থাকে। আর এসব অনিয়মের ভারে জন্ম নেয় নানান অসুখ। তবে দিনের শেষে সবচেয়ে বেশি আমাদের মাঝে উদগ্রীব হতে দেখা যায় এই ‘গ্যাস্ট্রিক’ ভাইটাকে। গ্যাস্ট্রিকটাকে এভাবে ভাই বলে ফেললাম কেনো? ঠিক সেই ‘ভাই- ভাই’ বন্ধনের মতোই নিত্যদিনের চলাফেরার সাথে গ্যাস্ট্রিকের সম্পর্ক আছে। একটু অনিয়ম আর বাড়তি খাবারের এপাশ ওপাশ হলেই সে হাজির। অনেকেরই এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় গলা খুব জ্বালাপোড়া করে, পেট ফাপা লাগে, মুখে টক অনুভূতি হয়। এবং প্রতিদিনই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়া লাগে। তবে এই ওষুধ ছাড়া কি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছাড়ানো যাবে না? এই উত্তরে কথা হবে খুব সহজ পাচঁটি ঘরোয়া সমাধানের। এবং এর প্রতিটি সমাধানই চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমানিত।
১. একটা খুব সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো, বিছানায় মাথার দিকটা উঁচু করে দেয়া। তবে এখানে মাথার নীচে দুইটা বালিশ দিয়ে কখনোই মাথা উঁচু করা যাবে না। এতে সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। কেননা এতে করে মাথা উঁচু থাকলেও শরীর সোজা না থাকার ফলে পেটে বেশ চাপ পরে। এতে আরো গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যায়। খুব সহজ পদ্ধতি হচ্ছে খাটের মাথার দিকের পায়ার নীচে কাঠ বা ছোট ইট দিয়ে উঁচু করে নিতে পারেন। এতে আমাদের পুরো বডি সোজা থাকবে এবং মাথার দিকটাও উচু থাকবে। ফলে গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে বেশ আরাম পাওয়া যায়। ২. আমাদের মধ্যে প্রচলিত একটা ধারনা জন্মে আছে যে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে একসাথে আমাদের অনেক খাবার খাওয়া নিষেধ। তবে জিনিসটা মোটেও এমন না। আমাদের একেকজনের একেক খাবারে গ্যাস্ট্রিক হয়। কারো ক্ষেত্রে চা- কফি খেলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে আবার কারো শশা খেলে। তাই প্রথমে এটা আইডেন্টিফাই করা জরুরি কোন খাবার খেলে নিজের গ্যাস্ট্রিকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ভাজাপোড়াতো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ভালোনা তাই এটা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। ৩. খাওয়া ও ঘুমের মাঝে বিরতি প্রয়োজন। খাওয়া শেষ করে সাথে সাথে ঘুমাতে চলে যাওয়া উচিত না। খাওয়া শেষ করে অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা সময় রাখবেন। অন্যথায় গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘন্টা আগেই আপনার রাতের খাবারটা শেষ করে ফেলতে। ৪. আমাদের অনেকের মাঝে একবসাতে অনেক পরিমানে খাবার খেয়ে নেয়ার টেনডেন্সি থাকে। এতে করে প্রকৃতপক্ষে পেটে খুব চাপ পরে। তাই প্রয়োজনে অল্প অল্প করে, বারবার খাবেন। ৫. শেষ পরামর্শ হচ্ছে ওজন নিয়ে। ওজন যদি বেশি হয় তাহলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হতে পারে৷ আপনি যদি মনে করেন আপনার অনেক গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে এবং আপনি ওভার ওয়েট। তাহলে একটু সিরিয়াসলি চেষ্টা করে ওজন কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। এবং অনেক সময় মানসিক চাপ থেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে দেখা যায়। খেয়াল করবেন আপনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন কিনা। এবং চেষ্টা করবেন নিজেকে প্রকৃতির মাঝে রেখে চিন্তামুক্ত রাখার। এতে স্বাস্থ্য যেরুপ ভালো থাকবে গ্যাস্ট্রিক থেকেও বেশ আরাম পাওয়া যাবে।
0 Comments